হযরত আমর ইবনে আওফ রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সা. এরশাদ করেন-
اتقوا زلة العالم وانتظروا هيئته
“উলামায়ে দ্বীনের ত্র“টি-বিচ্যুতি দেখা থেকে বেঁচে থাক এবং তাদেরকে বিচ্যুতি থেকে ফিরে আসার অপেক্ষা কর।” [সুনানে কুবরা লিল বায়হাকী : হা.১৯২৬৩, আল মুদখালু ইলাস সুনানিল কুবরা লিল বায়হাকী : হা.৬৭৩]
আলেম দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, যাকে আল্লাহ তা’আলা দ্বীন ইসলামের তথা কুরআন, হাদীস ও ফিকহের ইলম বা জ্ঞান দান করেছেন। তোমার নিশ্চিত জানা আছে অমুক কাজটি গুনাহ।  তুমি দেখতে পাচ্ছ একজন আলেম উক্ত গুনাহে জড়িত। এখানে তুমি এটা কখনো চিন্তা করবে না যে, এতবড় আলেম ব্যক্তি যখন এ গুনাহের কাজ করছেন, আমিও করি; বরং তুমি ঐ আলেমের কৃতগুনাহ থেকে বেচে থাকবে, তুমি ওটাতে লিপ্ত হয়ো না।

পাপ কাজে উলামাদের অনুসরণ করো না ।
উক্ত হাদীসের প্রথম বাক্যে তাদেরকে সর্তক করেছেন, যাদেরকে গুনাহ থেকে নিষেধ করা হলে বলে উঠে, অমুক আলেমও তো এটা করে, অমুক আলেম অমুক সময় এই কাজ করেছিলেন। রাসূল সা. এ ধরণের যুক্তি দেয়ার মূল কেটে দিয়েছেন যে,

তোমরা উক্ত আলেমের কৃতগুনাহের অনুসরণ করো না, বরং তোমরা আলেমগণের শুধু ভালো ভালো কাজগুলোর অনুসরণ করো। ঐ আলেম যদি সত্যিই কোন গুনাহের কাজ করেই থাকেন, তবে তোমাদের মনে যেন এটা বাসা না বাঁধে, অমুক বড় আলেম যখন এ কাজ করেছেন, আমিও করব।

একটু ভেবে দেখ, যদি উক্ত আলেম নরকের রাস্তায় পা বাড়ায়, তুমি কি তার পেছনে জাহান্নামের পথেই অগ্রসর হবে? তাকে যদি আগুনে পুড়ানো হয়, তুমিও কি আগুনে জ্বলবে? বাস্তব কথা হলো, তুমি এটাতে সম্মত হবে না। সুতরাং কি কারণে তুমি গুনাহের কাজে তাঁর অনুসরণ করছো?

আলেমের আমল গ্রহণীয় হওয়া জরুরী নয়
আলেমগণ বলেছেন, যে আলেম সত্য ও সঠিক অর্থেই আলেম, তার ফাতাওয়া ও মাসআলা গ্রহণযোগ্য। তার আমল গ্রহণযোগ্য হওয়ার প্রয়োজন নেই। যদি তিনি কোন ভুল কাজে লিপ্ত থাকেন আর তুমি জিজ্ঞাসা কর, এ কাজটি কি ঠিক? জায়েয? তখন তিনি উত্তর দিবেন, কাজটি না জায়েয। তাই তুমি তার দেয়া ফাতাওয়ার অনুসরণ কর। তার আমলের অনুসরণ করো না। সুতরাং একথা বলা অমুক কাজটি যেহেতু বড় আলেমগণ করেছেন, আমিও করি- যথার্থ নয়। যেমন ভাবে যথার্থ নয় এ কথা বলা- অমুক আলেমগণ যখন আগুনে পুড়ে ভস্ম হচ্ছেন, আমিও তাদের সাথে গিয়ে অগ্নিতে পুড়ে ছাই হই। এজন্য রাসূল সা. বলেছেন, আলেমদের ভুল-ত্র“টি ধরা থেকে বেঁচে থাক অর্থাৎ তাদের অন্যায় কাজের অনুসরণ করিও না।

আলেমগণের প্রতি মন্দ ধারণা না করা
কেউ কেউ আরেকটি ভুল করে থাকে, তাহল সে যখনই কোন আলেমকে ভুল কাজে লিপ্ত দেখে ততক্ষণাৎ তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে বসে। তার উপর মন্দ ধারণা পোষণ করে কখনো তার কুৎসা রটাতে থাকে। পর্যায়ক্রমে পুরো আলেম সম্প্রদায়ের উপর ঢালাওভাবে কুৎসা রটাতে থাকে যে, বর্তমানের আলেম সম্প্রদায় এমনি হয়ে থাকে।

নবী করীম সা. এধরণের ধারণা করতে বারণ করেছেন যে, যদি কোন আলেম গুনাহে লিপ্ত হয় তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করিও না। আলেমগণ তোমাদের মতই রক্ত মাংসে গড়া মানুষ। যে গোস্ত, হাড্ডি, তোমাদের আছে তাদেরও তাই আছে। যে আত্মা-রিপু তোমাদের রয়েছে তাদের ও সেরূপ রিপুই রয়েছে, শয়তান তোমাদের পেছনে যেমন লেগে আছে, তাদের পেছনেও তেমনি লেগে রয়েছে। তাঁরা কোন নবী নন, তাঁরা কোন নিষ্পাপ ফেরেশতাও নয়। বরং তাঁরা এ পৃথিবীরই বাসিন্দা।

সুতরাং এটা তোমরা কোত্থেকে বুঝে নিলে তারা গুনাহ থেকে পবিত্র? যেহেতু তারা মানুষ, মানবীয় চাহিদায় তাদেরও ভুল হওয়া স্বাভাবিক। অতএব তার গুনাহের কারণে তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং তার উপর মন্দ ধারণা করা ঠিক নয়। এজন্যই রাসূল সা. ঐ আলেম থেকে তড়িৎ সম্পর্ক ছিন্ন করতে বারণ করেছেন। তাকে সুপথে ফিরে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কারণ তার নিকট সঠিক জ্ঞান আছে, আশা করা যায় তিনি কোন সময় সঠিক পথে ফিরে আসবেন।

আলেমগণের জন্য দুআ কর
আলেমগণের জন্য প্রার্থনা কর: হে প্রভূ! অমুক ব্যক্তি আপনার দ্বীনের ধারক বাহক তার দ্বারা আমাদের দ্বীন ইসলামের জ্ঞান লাভ হয়। তিনি অমুক ভুলের মাঝে নিপতিত। হে আল্লাহ ! তোমার দয়ায় তাকে উক্ত ভুল থেকে উদ্ধার করে দাও। আমীন।

এ প্রার্থনায় তোমার দুটি লাভ হবে। এক. দুআ করার বিনিময়ে পূণ্য পাবে। দুই. অপর মুসলমানের মঙ্গল কামনা করার প্রতিদান পাবে। যদি তোমার এ দুআটি আল্লাহর নিকট গ্রহণীয় হয় তবে তো তুমি উক্ত আলেমের আত্মশুদ্ধির কারণ হবে। এর ফলশ্র“তিতে তিনি যত সৎকাজ করবেন, তা তোমার আমলনামায় লিপিবদ্ধ হবে। অতএব অকারণে কোন আলেমের কুৎসা রটানো, অমুক ব্যাক্তি বড় আলেম হয়েছে বটে কিন্তুু সে এ ধরনের বাজে কাজ করে, সুতরাং তার থেকে ভালোর আশা করা যায়না। তার দ্বারা তোমাদের কোন উপকার সাধিত হবার নয়।

আমলবিহীন আলেমও সম্মানের পাত্র
হাকীমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানুভী রহ. বলেন, আলেগণের উচিত তার ইলম অনুযায়ী আমল করা। কিন্তু যদি কোন আলেম স্বীয় ইলম অনুযায়ী আমল নাও করেন তবুও তিনি স্বীয় জ্ঞানের কারণে তোমাদের নিকট সম্মানের পাত্র। আল্লাহ তাআলা তাকে জ্ঞান দান করেছেন, তার এই ইলমেরও একটি সম্মান আছে। এ সম্মানের কারণে সে আলেমও সম্মানের পাত্র। যেমন মহান আল্লাহ তাআলা মাতা পিতার শানে ইরশাদ করেন। ‘যদি মাতা পিতা কাফের মুশরিকও হন তাহলে শিরিক বিষয়ে তাদের নির্দেশ গ্রহণ করোনা, কিন্তু দুনিয়াতে তাদের সাথে সদাচারণ করো। কারণ আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে তাদের মাতা পিতা হওয়ার যে সম্মান অর্জিত হয়েছে তা নীতিগত ভাবেই সম্মানের যোগ্য। অতএব তোমাদের পক্ষে তাদের হেয় করার কোন অবকাশ নেই।

তেমনি একজন আলেম আমলবিহীন হওয়ার পরেও তুমি তার জন্য দুআ করো, হে প্রভু! অমুক আলেমকে সৎকাজের সামর্থ্য দাও। তুমি তার অসৎ আচরণের হেতু তাকে হেয় করো না।
হযরত আশরাফ আলী থানুভী রহ. আলেমগণের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, এককভাবে শুধু জ্ঞান কোন বস্তু নয়, বা কোন কাজে আসেনা। যতক্ষণ পর্যন্ত না তার সাথে আমল থাকবে। পাশাপাশি তিনি একথাও বলেছেন, আমার অভ্যাস হলো যখনই আমার নিকট কোন আলেম ব্যক্তি আসেন, যদিও তার সম্পর্কে আমার জানা আছে যে, তিনি অমুক অমুক খারাপ কাজে অভ্যস্থ, তবুও আমি তার নিকট ইলম থাকার দরুণ তার সম্মান করে থাকি।

আলেমগণের সাথে পরস্পর সম্পর্ক স্থাপন কর ।
সুতরাং এ ধরণের প্রোপাগাণ্ডা করা এবং আলেমগণের দুর্ণাম করা বা তাচ্ছিল্য ভরে দেখা ও বলা: ‘আরে মিয়া আজকালকার আলেম সবই এক রকম। বর্তমানের আলেমদের তো অবস্থাই এই। কী আর বলব তাদের কথা।’ এ ধরনের উক্তি করা বর্তমানের একটি ফ্যাশান হয়ে পড়েছে। যারা অমুসলিম তাদের তো এরকম অবজ্ঞা করাই কাজের কাজ। কারণ তাদের জানা রয়েছে যতক্ষণ  পর্যন্ত আলেমদের কুৎসা রটানো না যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা মুসলিম জাতিকে পথহারা করতে পারব না। যখনই আলেমগণের সাথে জাতির সম্পর্ক ছিন্ন করে দিব, তখনই এই জাতিকে পথহারা করতে পারব।

হযরত আল্লামা মুফতী শফী রহ. বলেন: যখন ছাগল ভেড়াকে দলচুত্য করে দিবে তখনই বাঘ ও সিংহের জন্য স্বাধীনতা এসে যাবে। তারা যখন তখন যেখানে সেখানে ছাগল ভেড়াকে ধরে ধরে খাবে। সুতরাং বিজাতীয়দের কাজই তো হলো উলামাদের কুৎসা রটানো। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় হলো, বিজাতীয়দের অনুসরণ করে দ্বীনদার মুসলমানদেরও বর্তমানে এটা একটা ফ্যাশন হয়ে যাচ্ছে। তারাও আজ সর্বক্ষণ আলেমদের বদনাম দুর্ণাম ও তাদেরকে হেয়পতিপন্ন করার পিছনে মেতে উঠেছে। তারা বলে বেড়ায় উলামাদের তো এই অবস্থা  ঐ অবস্থা। অথচ এ আলোচনায় তাদের কোন লাভ নেই ক্ষতি ছাড়া। আর যখন মুসলিম জাতির উলামাদের প্রতি অনাস্থা সৃষ্টি হবে, তখন শয়তান হবে তাদের গুরু। সুতরাং নিজেদের স্বার্থে হলেও, কোন আলেমকে আমলহীন পেলে তার জন্য দুআ কর, তাদের পিছনে পড়না, বরং দুআ করলে আল্লাহর ইচ্ছায় এই দুআ তোমাদেরই কাজে আসবে, যখন সেই আলেম সঠিক পথে ফিরে আসবে।

ডাকাত হয়ে গেল পীর ।
হযরত মাওলানা রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী রহ. একদা স্বীয় মুরীদদের বলতেছিলেন। তোমরা কেন আমার পিছনে ছুটছো? আমার অবস্থাতো ঐ পীরের ন্যায় যে প্রকৃত পক্ষে একজন ডাকাত ছিল। ডাকাত যখন দেখল মানুষ গভীর ভালবাসা ও ভক্তিসহ পীরের নিকট উপঢৌকন নিয়ে যায়, তাদের হাতে চুমু খায়। তার মনে জাগল এটা তো ভাল ব্যবসা। আমি শুধু শুধু রাত জেগে ডাকাতি করে থাকি। তার চেয়ে ভাল, আমি পীর সেজে যাই। মানুষ আমার নিকট উপঢৌকন নিয়ে আসবে হাতে চুমু খাবে।

ব্যস, যেমনি চিন্তা তেমনি কাজ। লোকটি ডাকাতি ছেড়ে দিয়ে পীর সেজে গেল। একটি খানকা বানিয়ে বসে গেল। একটা লম্বা তাসবীহ নিল আর একটি লম্বা জামা পরিধান করল এবং পীরদের মতই হুলিয়া বানিয়ে তাসবীহ পড়া শুরু করল। এরপর মানুষ যখন দেখতে পেল, কোন একজন আল্লাহ ওয়ালা এখানে বসে আছে, তারা ভাবল বড় পীর হবে বোধ হয়। তখন মানুষ তার হাতে মুরীদ হতে লাগল। এক সময় মুরীদদের সংখা অনেক হলো, কেউ কেউ উপঢৌকন নিয়ে হাজির হতে লাগল। কেউ কেউ হাতে চুমু খেতে লাগল। পীর সাহেব প্রত্যেক মুরীদকে বিশেষ বিশেষ যিকির বলে দিলেন। তুমি এই যিকির করবে তুমি ঐ যিকির করবে। আর যিকিরের বৈশিষ্ট্য হলো, আল্লাহ তাআলা এর উসীলায় মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। যেহেতু  এ মুরীদগণ খাটি নিয়তে ও একাগ্রচিত্তে আল্লাহর যিকির করতে থাকলো। পরিণামে আল্লাহ তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করলেন। খুলে দিলেন তাদের অর্ন্তদৃষ্টি। আসীন করলেন উচ্চাসনে।

মুরীদের দুআও কাজে আসে
একদা মুরীদগণ পরস্পর আলোচনা করলো। আল্লাহ তা’আলা তো আমাদেরকে এ স্তরে পৌছিয়েছেন, আমরা দেখি আমাদের পীর সাহেব কোন স্তরে আছে। তারা মুরাকাবা করে পীর সাহেবের স্তর নির্ণয় করতে পারল না। মুরীদরা বলাবলি করতে লাগল, অসম্ভব আমাদের পীর সাহেবের অবস্থান এত উপরে যে, যেখানে আমাদের অর্ন্তদৃষ্টি পৌঁছতে পারেনা।

অবশেষে বিষয়টি পীর সাহেবকে জানাল, হযরত আমরা আপনার অবস্থান খুঁজতে চাইলাম, কিন্তু আপনার অবস্থান এতই উপরে যে, সেখানে আমরা পৌঁছতে পারিনি। তখন পীর সাহেব তার প্রকৃত অবস্থা  প্রকাশ করল এবং কাঁদু কাঁদু অবস্থায় বলল, তোমাদেরকে আমি আমার অবস্থান বলে দিলাম। আমি আসলে একজন ডাকাত। এরপর তার পীর হওয়ার পূর্ণ ঘটনা বলল। আরো  বলল, তোমাদের রিয়াযাত ও মুশাহাদার ময়দানে এত উচ্চাসন লাভ হয়েছে একমাত্র আল্লাহর যিকির একাগ্রতার সাথে করার কারণে। আর আমি তো সর্বনিন্ম স্তরে। তোমরা আমার স্থান কোথায় পাবে? সুতরাং তোমরা আমার নিকট থেকে দূরে সরে যাও। অন্য কোন পীরের সন্ধানে যাও। পীর সাহেব সম্পর্কে একথা শুনে মুরীদগণ সবাই মিলে পীর সাহেবের জন্য আল্লাহর দরবারে দুআ করল।

হে আল্লাহ ! আমাদের পীর সাহেব চোর হোক আর ডাকাত হোক। তুমি আমাদেরকে যা কিছু দিয়েছো, তা তার মাধ্যমেই দিয়েছো। হে আল্লাহ! এখন তুমি তাকেও আত্মশুদ্ধি করে দাও। সমাসীন করে দাও মর্যাদার উচ্চাসনে। যেহেতু মুরীদগণ মুখলেছ ও অত্যন্ত খোদাভীরু ছিল। তাই তাদের দুআর বরকতে আল্লাহ তা’আলা ঐ পীর সাহেবকেও ক্ষমা করে দেন। আর তাকে পৌঁছে দিলেন মর্যাদার উচ্চাসনে।

উপসংহার
যখন কোন আলেম ব্যাক্তির মাঝে কোন ভুল বিষয় পরিলক্ষিত হয়, তখন তাকে দুর্ণাম করে হেয় পতিপন্ন ও লাঞ্ছিত না করে তার জন্য দুআ করাই কাম্য। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে উপরোল্লিখিত কথা ও বিষয়ের উপর আমল করার তৌফিক দান করুন। আমীন।

লেখক : বিচারপতি আল্লামা তাকী উসমানী,


الدال علي الخير كفاعله . প্রতি শেয়ারে নিশ্চিত সওয়াব, আপনার একটি শেয়ারে কারো জীবন বদলাতে পারে, কেউ হতে পারে পরিপুর্ন গুনাহ মুক্ত, পেতে পারে হেদায়াত, তাই খুব শেয়ার করি, جزاک اللہ

Facebook Comments