একাকী সফর ও নি:সঙ্গ রাত্রি যাপন সুন্নাতের খেলাফ।

426
একাকী ঘুম

মুফতী ওযায়ের আমীনঃ ইবনে ওমর রাযি. বর্ণনা করেন: রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন: নি:সঙ্গতায় কী সমস্যা রয়েছে আমি যা জানি; মানুষ যদি তা জানতো, কোন আরোহী রাত্রিকালীন নি:সঙ্গ বিচরণ করতো না। -(বুখারী:২৯৯৮)
عَنْ ابْنِ عُمَرَ رضي الله عنهما عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : لَوْ يَعْلَمُ النَّاسُ مَا فِي الْوَحْدَةِ مَا أَعْلَمُ ، مَا سَارَ رَاكِبٌ بِلَيْلٍ وَحْدَهُ. رواه البخاري (2998)

ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রাহি. বর্ণনা করেন: নি:সঙ্গ রাত্রিযাপন ও একাকী ভ্রমন করতে রাসূলুল্লাহ সা. নিষেধ করেছেন। -(মুসনাদে আহমদ-২:৯১)
وقد أخرج الإمام أحمد في “المسند” (2/91) هذا الحديث بزيادة فيها : أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْ الْوَحْدَةِ أَنْ يَبِيتَ الرَّجُلُ وَحْدَهُ أَوْ يُسَافِرَ وَحْدَهُ )

روى الطبراني في الأوسط (2079) عن جابر أن النبي صلى الله عليه وسلم قال : لو يعلم الناس ما في الوحدة ما سار راكب بليل أبدا ، ولا نام رجل في بيت وحده.
জাবের রাযি. বর্ণনা করেন: রাসূলুল্লাহ সা. বলেন: নির্জনতা ও নি:সঙ্গতায় কী যে সমস্যা রয়েছে মানুষ যদি জানতো, কোন মুসাফির রাত্রিকালীন কখনোই ভ্রমন করতো না। কোন লোক ঘরে নি:সঙ্গ ঘুমাতো না। -(তাবরানী-২০৭৯)

নির্জন একা রাত্রিযাপন কতটা ঠিক। ইসলামে এ বিষয়ে কোন নির্দেশনা আছে কি-না? তবে একা থাকা অনেকটা সাহসের ব্যাপার। কিন্তু ঝুকিও কম নয়। হোজায়ফা ভাই মারা গেলেন। বাঁচার কতো আকুতিই না তিনি করেছিলেন হয়তো। এটাই বা কে বলতে পারে। শুনেছি তিনি খাট থেকে নিচে ফ্লোরে পড়েছিলেন। কেউ যদি থাকতেন হয়তো কোন সহযোগীতা করতে পারতেন।


এটা পড়ুন –  জনসংখ্যা ও বিশ্বাস


বরুড়া মাদরাসা মসজিদের ২তলায় সম্ভবত ২০০২সালে চাঁদপুরের একজন ছাত্র মৃত্যুবরন করেছিলেন। তাও তিনি একা ছিলেন। সহপাঠী ছাত্ররা সাড়াদিন দারসে না পেয়ে দুপুরবেলা তাঁকে সিড়ির উপরে তাঁর কক্ষে তাকে খুঁজতে যায়। সেখানে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ পান। কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করেন। তারা দেখতে পান তা লাশ পড়ে আছে। নাকে মুখে খানিকটা রক্তের দাগ ছিল। তার শরীরে পিঁপড়ে ধরেছিল।

বরুড়ার ঝাপুয়া মাদরাসায় ময়মনসিংহের একজন শিক্ষক নির্জন কক্ষে মৃত্যুবরন করেন। পরে তার লাশ পাওয়া যায়। এর রহস্য আজো অনুদ্ঘাটিত।

বরুড়া মাদরাসায় আমাদের জুনিয়র ঝাপুয়া-কৈয়্যনির একছাত্র মুমতাজ উদ্দীন ভাই নিজ বাড়ির পুকুরঘাটে শেষরাতে রহস্যজনক মৃত্যুবরন করেন। সকালে তার লাশ পাওয়া যায়।

মালিবাগ জামেয়া শরইয়্যাহ-র কাফিয়া জামাতের সহপাঠী আব্দুল্লাহ (ছদ্মনাম)। ১৯৯৮ঈ. সনে পীরজঙ্গি মাদরাসায় শরহে বেকায়া জামাতে ভর্তি হলেন। একদিন ফজরে খবর পেলাম আবদুর মুমিন ভাই মৃত্যুবরন করেছেন। দৌড়ে ছুটে গেলাম পীরজঙ্গি মাদরাসায়। শুনতে পেলাম। ছাত্রদের মাঝেই অন্যদিনের মতো ঘুমিয়েছিলেন। শেষরাতে দাপাদাপি করে ছাত্রদের মাঝেই মারা গেলেন। মৃত্যুযন্ত্রণা এতোটা কঠিন ছিল যে তিনি বিছানায়-ই মল-মূত্র ত্যাগ করেন। আল্লাহ পাক আমাদেরকে স্বাভাবিক সহজ মৃত্যু নসীব করুন। তবে কিছুটা মনের তৃপ্তি হলো মৃত্যুর পূর্বে প্রিয়ভাজনেষুদের কিঞ্চিৎ ছোঁয়া পেয়েছিলেন। আজো আব্দুল্লাহ ভাইয়ের মন কাঁদে। আঁখি কাঁদে। হৃদয় কাঁদে।

Facebook Comments