১। জুনদুব ইবন আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি কুরবানির দিন রাসুল সা.-এর কাছে উপস্থিত ছিলেন। রাসূল সা. নামায আদায় করলেন। এরপর খুৎবা দিলেন এবং বললেন, নামায আদায় করার পূর্বে যে ব্যক্তি কুরবানির পশু জবাই করেছে, সে যেন এর স্থলে আরেকটি কুরবানি করে। আর যে ব্যক্তি নামাযের পূর্বে জবাই করেনি সে যেন আল্লাহর নামে জবাই করে। [সহীহ বুখারি : হাদিস ৬৮৯৬] ( হজ ও কুরবানি )
২। আনাস বিন মালেক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সা. বিসমিল্লাহ পড়ে এবং তাকবীর বলে দুইটি ভেড়া কুরবানি করেছেন। [সহীহ বুখারি : হাদিস ৬৮৯৫]
৩। আবিস রহ. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমি আয়িশা রা.-কে জিজ্ঞেস করলাম, রাসুল সা. কি কুরবানির পোশত তিন দিনের বেশী সময় খেতে নিষেধ করেছেন? তিনি বললেন, সেই বছরেই কেবল নিষেধ করেছিলেন যেই বছর মানুষ অনাহারে আক্রান্ত হয়েছিল। তখন তিনি চেয়েছিলেন যেন ধনীরা গরীবদের খাওয়ায়। আমরা তো বকরীর পায়াশুলো তুলে রাখতাম এবং পনের দিন পর তা খেতাম। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হল, কোন্ জিনিস আপনাদের এগুলো খেতে বাধ্য করত? তিনি হেসে বললেন, মুহাম্মদ সা. আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তাঁর পবিবার-পরিজন একাধারে তিন দিন তরকারিসহ গমের রুটি পেট ভরে খান নি। [সহীহ বুখারি : হাদিস ৫০২৯] ( হজ ও কুরবানি )
৩। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সা. এক ব্যক্তিকে একটা কুরবানির উট হাঁকিয়ে নিয়ে যেতে দেখে বললেন, তুমি এর উপর সাওয়ার হয়ে যাও। সে বলল ইয়া রাসুলুল্লাহ সা.! এটি তো কুরবানির উট। তখন তিনি দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয়বার বললেন, ওয়াইলাকা (তোমার অনিষ্ট হোক) তুমি এতে সাওয়ার হয়ে যাও। [সহীহ বুখারি : হাদিস ৫৭২৯]
৪। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসুল সা.-এর কাছে আরজ করল, আমি তো প্রস্তর নিক্ষেপের পূর্বে যিয়ারত করে ফেলেছি। তিনি বললেন, কোন দোষ নেই। আরেক ব্যক্তি বলল, আমি তো যবেহ করার পূর্বে মাথা মু-ন করে ফেলেছি। তিনি বললেন, কোন দোষ নেই। অপর ব্যক্তি বলল, আমি তো প্রস্তর নিক্ষেপের পূর্বে যবেহ করে ফেলেছি! তিনি বললেন, কোন দোষ নেই। [সহীহ বুখারি : হাদিস নাম্বার ৬২১১]
৫। আবদুল্লাহ বিন আমর বিন আস রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. কুরবানির দিন খুতবা দিচ্ছিলেন। তখন এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়াল এবং আরজ করল, ইয়া রাসুলুলাহ! আমি ধারণা করলাম যে, অমুক অমুক আমলের পূর্বে অমুক অমুক রুকন হবে। এরপর অপর এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়াল এবং আরজ করল, ইয়া রাসুলুল্লাহ সা.! অমুক অমুক আমলের পূর্ব অমুক আমল হবে, (অর্থাৎ তারা যবেহ, হলক ও তাওয়াফ) এই তিনটি কাজ সম্পর্কে জানতে চাইল। তখন রাসুল সা. বললেন, করতে পার, কোন দোষ নেই। ঐ দিন যা-কিছু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো তিনি বললেন, করতে পার কোন দোষ নেই। [সহীহ বুখারি : হাদিস ৬২১০]
৬। আলী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাদের কাছে আল্লাহর কিতাব এবং রাসুল সা. থেকে বর্ণিত এই সহীফা ছাড়া আর কিছুই নাই। তিনি আরো বলেন, আয়ির নামক স্থান থেকে অমুক স্থান পর্যন্ত হল হারম। যদি কেউ এতে কুরআন-সুন্নাহর খেলাফ অসঙ্গত কোন কাজ করে অথবা কুরআন-সুন্নাহর খেলাফ আচরণকারীকে আশ্রয় দেয়, তাহলে তাঁর উপর আল্লাহর লা’নত এবং সকল ফেরেশতা এবং মানুষের। সে ব্যক্তির কোন নফল এবং ফরজ ইবাদাত কবুল করা হবে না। তিনি আরো বলেন, মুসলমান কর্তৃক নিরাপত্তাদানের অধিকার সকলের ক্ষেত্রে সমান। তাই যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের দেওয়া নিরাপত্তাকে লঙ্ঘন করবে, তাঁর প্রতি আল্লাহর লা’নত এবং সকল মানুষের ও ফিরিশতাদের। আর কবুল করা হবে না তাঁদের কোন নফল এবং ফরজ ইবাদাত। যে ব্যক্তি তাঁর মাওলার (মিত্রের) অনুমতি ব্যতীত অন্য কাওমের সাথে বন্ধুত্ব করবে, তাঁর প্রতিও আল্লাহর লা’নত এবং সকল ফেরেশতা ও মানুষের। সে ব্যক্তির কোন নফল এবং ফরজ ইবাদাত কবুল করা হবে না। [সহীহ বুখারি : হাদিস ১৭৪৯]
৭। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলতেন, আমি যদি মদিনাতে কোন হরিণকে বেড়াতে দেখি তাহলে তাঁকে আমি তাড়াবো না। কেননা রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, মদিনার কংকরময় দুই এলাকার মধ্যবর্তী এলাকা হল হারম বা সম্মানিত স্থান। [সহীহ বুখারি : হাদিস নাম্বার ১৭৫২]
৮। উকবা ইবনে আমির রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার বোন পায়ে হেঁটে হজ করার মান্নত করেছিল। আমাকে এ বিষয়ে রাসুল সা. থেকে ফতোয়া আনার অনুরোধ করলে আমি রাসুল সা.-কে বিষয়টি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, পায়ে হেঁটেও চলুক, সওয়ারও হোক। [সহীহ বুখারি : হাদিস ১৭৪৪]
৯। আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. এক বৃদ্ধ ব্যক্তিকে তাঁর দুই ছেলের উপর ভর করে হেঁটে যেতে দেখে বললেন, তাঁর কি হয়েছে? তাঁরা বললেন, তিনি পায়ে হেটে হজ করার মান্নত করেছেন। রাসূল বললেন, লোকটি নিজেকে কষ্ট দিক, আল্লাহ তাআলার এর কোন প্রয়োজন নেই। তাই তিনি তাঁকে সওয়ার হয়ে চলার জন্য আদেশ করলেন। [সহীহ বুখারি : হাদিস ১৭৪৩]