নবীকে হাজির নাজির বিশ্বাস করা কী কোন মুসলিমের আকীদা হতে পারে ?

456
হাজীর নাজীর বিশ্বাস

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী  হাজির নাজির মানে কি ?

হাজির ও নাজির উভয় শব্দই আরবী। হাজির অর্থ হল উপস্থিত। আর নাজির অর্থ হল দ্রষ্টা। তথা যিনি দেখেন।

আল্লাহ তাআলা কি হাজির নাজির না রাসূল সাঃ?

রেজাখানী মতাদর্শী বেদআতি গ্র“পের আক্বীদা হল আল্লাহ তাআলা হাজির নন।

পাকিস্তানের রেজাখানী বেরেলবী গ্রুপের আলেম আহমাদ ইয়ারখান গুজরাটী তার রচিত জাআল হক্ব গ্রন্থে লিখেন-“প্রতি স্থানে হাজির হওয়া এটা আল্লাহ তাআলার সিফাত কখনোই নয়। আল্লাহ তাআলা স্থান থেকে পবিত্র। {জাআল হক্ব ওয়া যাহাক্বাল বাতিল-১৬১}

আহমাদ ইয়ারখান সাহেব এর পর লিখেন-“আল্লাহ তাআলা প্রতিটি স্থানে বিদ্যমান মানাটা বদ্বিনী। প্রতি স্থানে বিদ্যমান হওয়াটা এটা রাসূল সাঃ এরই শান। {জাআল হাক্ব ওয়াযহাক্বাল বাতিল-১৬২}

সহীহ আক্বিদা

আল্লাহ তাআলা সর্বত্র বিরাজমান তথা হাজির। কিন্তু কিভাবে হাজির তা আমাদের জানা নেই। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সর্বত্র হাজির থাকার উপর কুরআনে কারীমে অসংখ্য আয়াত রয়েছে। যেমন-

وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ ۖ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ ۖ فَلْيَسْتَجِيبُوا لِي وَلْيُؤْمِنُوا بِي لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُونَ [٢:١٨٦]

আর আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে বস্তুতঃ আমি রয়েছি সন্নিকটে। যারা প্রার্থনা করে, তাদের প্রার্থনা কবুল করে নেই, যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে। কাজেই আমার হুকুম মান্য করা এবং আমার প্রতি নিঃসংশয়ে বিশ্বাস করা তাদের একান্ত কর্তব্য। যাতে তারা সৎপথে আসতে পারে। {সূরা বাকারা-১৮৬}

وَلَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ وَنَعْلَمُ مَا تُوَسْوِسُ بِهِ نَفْسُهُ ۖ وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِيدِ [٥٠:١٦

আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি এবং তার মন নিভৃতে যে কুচিন্তা করে, সে সম্বন্ধেও আমি অবগত আছি। আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমনী থেকেও অধিক নিকটবর্তী। {সূরা কাফ-১৬}

فَلَوْلا إِذَا بَلَغَتِ الْحُلْقُومَ (83) وَأَنْتُمْ حِينَئِذٍ تَنْظُرُونَ (84) وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْكُمْ وَلَكِنْ لا تُبْصِرُونَ (85

অতঃপর যখন কারও প্রাণ কন্ঠাগত হয়। এবং তোমরা তাকিয়ে থাক, তখন আমি তোমাদের অপেক্ষা তার অধিক নিকটে থাকি; কিন্তু তোমরা দেখ না। (সূরা ওয়াকিয়া-৮৭, ৮৪, ৮৫)

وَلِلَّهِ الْمَشْرِقُ وَالْمَغْرِبُ ۚ فَأَيْنَمَا تُوَلُّوا فَثَمَّ وَجْهُ اللَّهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ وَاسِعٌ عَلِيمٌ [٢:١١٥]

পূর্ব ও পশ্চিম আল্লারই। অতএব, তোমরা যেদিকেই মুখ ফেরাও, সেদিকেই আল্লাহ বিরাজমান। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বব্যাপী, সর্বজ্ঞ। (সূরা বাক্বারা-১১৫}

قوله تعالى  { وَهُوَ مَعَكُمْ  أَيْنَمَا كُنتُمْ } [ الحديد : 4 

তোমরা যেখানেই থাক না কেন, তিনি তোমাদের সাথে আছেন {সূরা হাদীদ-৪}

أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۖ مَا يَكُونُ مِنْ نَجْوَىٰ ثَلَاثَةٍ إِلَّا هُوَ رَابِعُهُمْ وَلَا خَمْسَةٍ إِلَّا هُوَ سَادِسُهُمْ وَلَا أَدْنَىٰ مِنْ ذَٰلِكَ وَلَا أَكْثَرَ إِلَّا هُوَ مَعَهُمْ أَيْنَ مَا كَانُوا ۖ ثُمَّ يُنَبِّئُهُمْ بِمَا عَمِلُوا يَوْمَ الْقِيَامَةِ ۚ إِنَّ اللَّهَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ [٥٨:٧]

আপনি কি ভেবে দেখেননি যে, নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, আল্লাহ তা জানেন। তিন ব্যক্তির এমন কোন পরামর্শ হয় না যাতে তিনি চতুর্থ না থাকেন এবং পাঁচ জনেরও হয় না, যাতে তিনি ষষ্ঠ না থাকেন তারা এতদপেক্ষা কম হোক বা বেশী হোক তারা যেখানেই থাকুক না কেন তিনি তাদের সাথে আছেন, তারা যা করে, তিনি কেয়ামতের দিন তা তাদেরকে জানিয়ে দিবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত। (সূরা মুজাদালা-৭)

উদাহরণত কিছু আয়াত উপস্থাপন করা হল। এরকম আরো অনেক আয়াতে সরাসরি প্রমাণ করে যে,আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সর্বত্র বিরাজমান। কিন্তু বিরাজমানতার অবস্থা কি? এটা আমাদের জানা নেই। এটা আল্লাহ তাআলাই ভাল জানেন।

সুতরাং বুঝা গেল সর্বত্র বিরাজমানতা তথা হাজির থাকাটা এটা আল্লাহর সিফাত। এ সিফাত অন্যের জন্য প্রতিষ্ঠিত করা সুষ্পষ্ট শিরকী আক্বিদা।

নবী হাজির নাজির হওয়া মুসলমানদের নয় খৃষ্টানদের আক্বিদা

খৃষ্টানদের আক্বিদা হল হযরত ঈসা আঃ সর্বত্র বিরাজমান, তথা হাজির নাজির। যেমনটি লিখেছেন খৃষ্টান পাদ্রী ইমাদুদ্দীন তার রচিত “তাফতীশুল আওলীয়ায়। তিনি লিখেন- ঈসা আঃ প্রত্যেক স্থানে হাজির ও নাজির। {তাফতীশুল আওলিয়া-১০৮}

খৃষ্টানদের আক্বিদা হল যে মজলিস ঈসা আঃ এর নামে করা হয়, সেখানে ঈসা আঃ উপস্থিত হন।

ঈসা আঃ বলেন-“কেননা যেখানে দুই অথবা তিনজন আমার নামে একত্র হয়, সেখানে আমি তাদের মাঝে উপস্থিত হই”। {ইঞ্জিল, মথি, অধ্যায় ১৮, পরিচ্ছেদ-২০}

কোন সৃষ্টিকে সর্বত্র হাজির নাজির বিশ্বাস করা এটা খৃষ্টানদের আক্বিদা মুসলমানদের আক্বিদা নয়।

শরীয়তের দৃষ্টিতে সর্বত্র হাজির নাজির হওয়া এবং সর্বত্র বিদ্যমান হওয়া এটা শুধুমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সাথেই খাস। সৃষ্টিজীবের মাঝে এ সিফাত কখনোই নেই।

একটি উদ্ভট যুক্তি ও তার খন্ডন

মাওলানা আহমাদ ইয়ারখান রেজাখানী বেরেলবী বলেন-“হাজীর হওয়া আল্লাহ তাআলার সিফাত নয়। কারণ হাজির অর্থ হল যিনি আগে ছিলেন না, এখন এসেছেন, আর এমন বিশ্বাস আল্লাহ তাআলা ক্ষেত্রে বলা কিছুতেই জায়েজ নয়, আর নাজির হল দ্রষ্টা। আল্লাহ তাআলারতো কোন চোখই নাই, তাই তিনি আমাদের মত দেখবেন কিভাবে? তাছাড়া হাজির নাজির যদি আল্লাহর সিফাতই হইতো, তাহলে আল্লাহর নিরান্নবই নামের মাঝে এ সিফাতের কথা থাকতো। অথচ তা নেই। সুতরাং বুঝা গেল যে, এটা আল্লাহ তাআলার সিফাত নয়। বরং এটি মাখলুকের সিফাত। তাই এ সিফাতের অধিকারী হলেন রাসূল সাঃ ও বুজুর্গানে দ্বীন। {দ্রষ্টব্য-জাআল হক্ব ওয়া জাহাক্বাল বাতিল-১৫৩}

প্রথম জবাব

এতে কোন সন্দেহ নেই যে, আল্লাহ তাআলা কোন স্থানের মুখাপেক্ষি নন, সেই সাথে আল্লাহ তাআলার প্রসিদ্ধ নাম হল ৯৯টি।

কিন্তু কথা হল এ ৯৯ নাম ছাড়া আল্লাহ তাআলার কি আর কোন নাম নেই? একটু চোখ খুলে দেখুন-

১-

আল্লামা নববী রহঃ শরহে মুসলিমের ২ নং খন্ডের ৩২২ নং পৃষ্ঠায়, আল্লামা খাজেন রাহঃ তাফসীরে খাজেনের ২ নং খন্ডের ২৬৪ নং পৃষ্ঠায় লিখেন যে, “সমস্ত ওলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে একমত যে, আল্লাহ তাআলা সকল নাম কেবল এ ৯৯টিই নয়, বরং এছাড়াও আছে।

২-

(একথার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইমাম নববী রহঃ লিখেন) ইমাম আবু বকর ইবনুল আরাবী রহঃ আল্লাহ তাআলা এক হাজার নাম একত্র করেছেন। এর পর তিনি স্পষ্টই লিখেছেন যে, وهذا قليلতথা “এটাও অনেক অল্প”।

৩-

ইমাম রাজী রহঃ লিখেন যে, ওলামায়ে কেরামের নিকট আল্লাহ তাআলার এক হাজার নাম প্রসিদ্ধ ও পরিচিত। যা কিতাবুল্লাহ ও হাদীসে পাওয়া যায়। {তাফসীরে কাবীর, মুকাদ্দামা-১/৩}

৪-

হাফেজ ইবনে কাসীর রহঃ বর্ণনা করেন যে, আল্লাহ তাআলার ৫ হাজার নাম আছে। যা কুরআনে কারীম, সহীহ হাদীস ও পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবে বলা হয়েছে। {তাফসীরে ইবনে কাসীর-১/১৯}

যখন সকল ওলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে একমত যে, আল্লাহর সিফাতী নাম শুধু এ নিরান্নব্বই নামে সীমাবদ্ধ নয়, সেখানে ৯৯ নামে হাজির নাজির সিফাতী নাম না থাকাতে তা বাতিল বলাটা কতটা আহমকীর পরিচয় একটু ভেবে দেখবেন কি?

দ্বিতীয় জবাব

যদি আপনাদের কথা দু’মিনিটের জন্য মেনেও নেই যে,আল্লাহর সিফাতী নাম এ ৯৯ নামে সীমাবদ্ধ। তাহলে আপনাদের কাছে প্রশ্ন যে, আল্লাহর নামসমূহকে কি সহজতার জন্য অন্য ভাষায় অনুবাদ করে বলা  জায়েজ আছে? যদি বলেন জায়েজ নেই। তাহলে প্রশ্ন হল যে, আল্লাহ এর অনুবাদ তাহলে খোদা বলা কিভাবে জায়েজ? এটাতো ৯৯ নামের অন্তর্ভূক্ত নয়। অথচ এ অনুবাদ বেরেলবী গ্র“প অহর্নিশি করে বেড়ায়।

যদি বলা হয় যে, আরবীতে ইয়া রব, ইয়া মালিক এর অনুবাদ ফার্সিতে করা হয় খোদা বলে। তাতে কোন সমস্যাতো নেই।

তাইতো আমরা বলি যে, এটা যেমন, তেমনি এখানে দেখে নিতে পারেন যে, ৯৯ নামের মাঝে কোন নামের অনুবাদ হাজির নাজির হয় কি না?

চোখ খুলে মেশকাত শরীফের ১ নং খন্ডের ১৯৯ নং পৃষ্ঠায় দেখুন ইবারতের নিচে শহীদ অর্থ লিখা হয়েছে হাজির। আর প্রসিদ্ধ ডিকশনারী “সাররাহ”এ লিখা হয়েছে যে, শহীদ মানে হাজির ও স্বাক্ষ্য।

এমনিভাবে “বাসীর”এর অর্থ লিখা হয়েছে যে, দ্রষ্টা,তথা নাজির। দেখুন-“সাররাহ”-১৬০।

এখন বলুন! আল্লাহ শহীদ ও বসীর নয় কি? আর শহীদের অনুবাদ হাজির, আর বাসীরের অনুবাদ নাজির জায়েজ আছে কি নেই?

এবার তাহলে বেরেলবী রেজাখানী গ্র“পের ব্যক্তিরা হাদীস ব্যাখ্যাতা ও অভিধানবীদদের বিরুদ্ধে এ্যাকশনে নামতে পারেন কেন তারা শহীদের অনুবাদ হাজির করলেন? কারণ হাজিরতো আপনাদের পরিভাষা অনুযায়ী কেবল ঐ ব্যক্তিই হতে পারে, যিনি প্রথমে ছিলেন না, তারপর এসে গেলেন।

সুতরাং বুঝা গেল যে, তাদের এ যুক্তিটি একটি অজ্ঞতাসূচক খোড়া যুক্তি।

তৃতীয় জবাব

রেজাখানী বেদআতিতের যুক্তি হল যে, নাজির তথা দ্রষ্টা হওয়ার জন্য শারিরিক চোখ থাকা আবশ্যক। আর আল্লাহ তাআলা যেহেতু শারিরিক চোখ থেকে মুক্ত, তাই আল্লাহ তাআলা নাজির নন।

এ সকল হযরাতদের কাছে আমাদের বিনীত অনুরোধ হল নিম্নোক্ত আয়াতের মানে কি? আমাদের আমাদের একটু কষ্ট করে বুঝিয়ে দিন। যেমন-

১-

কুরআনে কারীমে হযরত মুসা আঃ এর ঘটনা যাতে হযরত মুসা আঃ তার জাতিকে নিম্নোক্ত শব্দে নসিহত করেন-

قَالُوا أُوذِينَا مِنْ قَبْلِ أَنْ تَأْتِيَنَا وَمِنْ بَعْدِ مَا جِئْتَنَا ۚ قَالَ عَسَىٰ رَبُّكُمْ أَنْ يُهْلِكَ عَدُوَّكُمْ وَيَسْتَخْلِفَكُمْ فِي الْأَرْضِ فَيَنْظُرَ كَيْفَ تَعْمَلُونَ [٧:١٢٩

তারা বলল, আমাদের কষ্ট ছিল তোমার আসার পূর্বে এবং তোমার আসার পরে। তিনি বললেন, তোমাদের পরওয়ারদেগার শীঘ্রই তোমাদের শক্রদের ধ্বংস করে দেবেন এবং তোমাদেরকে দেশে প্রতিনিধিত্ব দান করবেন। তারপর দেখবেন, তোমরা কেমন কাজ কর। {সূরা আরাফ-১২৯}

রেজাখানীদের কাছে আমাদের জিজ্ঞাসা যে, যদি দেখার জন্য শারিরিক চোখ লাগে, তাহলে আয়াতে فَيَنْظُرَতথা তিনি ”দেখবেন”কথাটার মানে কি? আমাদের মত শারিরিক চোখ নেই বলে আল্লাহ তাআলা কি দেখেন না? তিনি কি দ্রষ্টা নয়?

 

২-

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন অন্যত্র ইরশাদ করেন-

ثُمَّ جَعَلْنَاكُمْ خَلَائِفَ فِي الْأَرْضِ مِنْ بَعْدِهِمْ لِنَنْظُرَ كَيْفَ تَعْمَلُونَ [١٠:١٤

 

অতঃপর আমি তোমাদেরকে যমীনে তাদের পর প্রতিনিধি বানিয়েছি যাতে দেখতে পারি তোমরা কি কর। {সূরা ইউনুস-১৪}

 

এ আয়াতেও নজর শব্দ বিদ্যমান। এর মানে কি একটু বলবেন কি?

 

৩-

عن أبي سعيد الخدري قال : قال رسول الله صلى الله عليه و سلم : إن الدنيا حلوة خضرة و إن الله مستخلفكم فيها فناظر كيف تعلمون فاتقوا الدنيا و اتقوا النساء

অনুবাদ- হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ বলেন। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনযে, নিশ্চয় দুনিয়া হল মিষ্টান্ন আর সবুজ শ্যামলিমা। আর নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তোমাদের এতে খলীফা বানাবেন, তারপর দেখবেন তোমরা কি কাজ কর? তাই দুনিয়া থেকে দুরে থাক, আর মহিলা থেকে (চক্রান্ত থেকে) বেঁচে থাক। {শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-১০৩০১}

 

এ হাদীসে সুষ্পষ্ট নাজির শব্দ এসেছে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের শানে। এ নাজির মানে কি? একটু বলবেন কি?

 

৪-

হযরত ইয়াজ বিন হিমার রাঃ থেকে বর্ণিত। এক দীর্ঘ হাদীসের একাংশে রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন-

وَإِنَّ اللَّهَ نَظَرَ إِلَى أَهْلِ الأَرْضِ فَمَقَتَهُمْ عَرَبَهُمْ وَعَجَمَهُمْ إِلاَّ بَقَايَا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ

অনুবাদ- নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা ভূমিবাসীদের দিকে নজর দিয়ে দেখে সকল আরব আজমের লোকদের উপর অসন্তুষ্ট হলেন। তবে আহলে কিতাবীদের মধ্য থেকে কতিপয় লোক আল্লাহ তাআলার অসন্তুষ্টি থেকে বেঁেচ যায়। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং- ৭৩৮৬, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৭৪৮৪, মুসনাদে তায়ালিসী, হাদীস নং-১০৭৯, মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-২০০৮৮}

এ হাদীসে নজর দিয়ে দেখে মানে কি?

৫-

অন্য হাদীসে রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন-

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « إِنَّ اللَّهَ لاَ يَنْظُرُ إِلَى صُوَرِكُمْ وَأَمْوَالِكُمْ وَلَكِنْ يَنْظُرُ إِلَى قُلُوبِكُمْ وَأَعْمَالِكُمْ

অনুবাদ-হযরত আবু হুরায়রা রাঃ বর্ণনা করেন। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন যে, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তোমাদের বাহ্যিক সুরত দেখেন না, (তথা কে কালো, কে সুন্দর) এবং তোমাদের সম্পদ দেখেন না। বরং তিনি তোমাদের মন ও আমলের অবস্থা দেখেন। {সহীহ মুসলিম,হাদীস নং-৬৭০৮, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৩৯৪, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৭৮২৭}

এ দুটি হাদীসে স্পষ্ট নজর শব্দ এসেছে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের শানে। আগের বর্ণিত শুয়াবুল ঈমানের হাদীসেতো সরাসরি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে নাজির বলা হয়েছে।

সুতরাং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এর “নাজির”হওয়াকে অস্বিকার করাতো সরাসরি কুরআন হাদীস অস্বিকার করা। রেজাখানী গ্র“প যদি একথার ইলান করে দেন যে, তারা কুরআন ও হাদীস মানেন না, শুধু রেজাখানী ধর্মগুরুর কথাই মানেন,তাহলেতো আর কোন কথাই নেই। কিন্তু কুরআন হাদীস মানেন বলে প্রচার করেও এসব আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য সাব্যস্ত করা নাজির আক্বিদা অস্বিকার করেন কেন?

দৃষ্টি আকর্ষণ

একটি কথা ষ্পষ্ট করে জেনে রাখা দরকার যে, আমরা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আক্বিদা হল, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হাজির, কিন্তু তাঁর আমাদের মত শরীর নেই। তাই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার স্বীয় শান অনুযায়ী হাজির সর্বত্র। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নাজির,তথা সর্বদ্রষ্টা। কিভাবে সবকিছু দেখেন। সেটা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনই ভাল জানেন। এটাও তার শান অনুযায়ী প্রযোজ্য। এটার আর কোন ব্যাখ্যা বিশ্লেষণে যাওয়াটা ঈমানের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই এসব বিষয়ে যত বিতর্ক এড়িয়ে চলা যায়, ততই মঙ্গলজনক।

কুরআন হাদীস সম্পর্কে অজ্ঞতার চিত্র

উল্লেখিত কুরআন ও হাদীসের দলীল দ্বারা একথা স্পষ্ট যে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হাজির ও নাজির। তবু রেজাখানী বেরেলবী বেদআতি আলেম মাওলানা সৈয়দ আহমাদ সাঈদ কাজেমী আমরূহী মুলতানী কী বলেন দেখুন-

“আল্লাহ তাআলার আসমায়ে হুসনার মাঝে হাজির নাজির কোন নাম নেই। আর কুরআন ও হাদীসে কোথাও হাজির নাজির শব্দ আল্লাহ তাআলার জন্য ব্যবহৃত হয়নি। সালাফে সালেহীনের কেউ আল্লাহর শানে এ শব্দ বলেন নি। কোন ব্যক্তি কিয়ামত পর্যন্ত একথা প্রমাণ করতে পারবে না যে, সাহাবায়ে কেরাম রাঃ অথবা তাবেয়ীগণ অথবা আইয়িম্মায়ে মুজতাহিদীনগণ আল্লাহর শানে হাজির নাজির শব্দ ব্যবহার করেছেন। {তাসকীনুল খাওয়াতীর-৩}

কাজেমী সাহেব স্বীয় দিলের উপর হাত রেখে (যদি দিল বলে কিছু থাকে) বলুন- উপরে বর্ণিত শুয়াবুল ঈমানে ১০৩০১ নং হাদীসে আল্লাহর শানে বলা ”নাজির”শব্দটি কি আপনার গোচরিভূত হয়নি? কি এটা হাদীস নয়।

আবু সাঈদ খুদরী রাঃ সাহাবী নয়, যিনি আল্লাহর শানে নাজির শব্দসহ হাদীস বর্ণনা করছেন?

আবু নাজরাহ রহঃ কি তাবেয়ী নয়, যিনি এ হাদীস বর্ণনা করেছেন?

তাহলে কাজেমী সাহেবের কাছে আমাদের প্রশ্ন হল-এরকম ভুল দাবি সাহাবী ও তাবেয়ী কি করে করলেন? না জেনে না বুঝে? (নাউজুবিল্লাহ)

কাজেমী সাহেবের আরো আগ্রাসী মন্তব্য

“এমনিভাবে মুতাআখখিরীনর জামানায় যখন কিছু লোক আল্লাহ তাআলাকে হাজির নাজির বলতে শুরু করা হল, তখনকার ওলামারা এটাকে বাঁধা দেন। এমন কি কিছু ওলামাগণতো এভাবে বলাকে কুফরী মন্তব্য করেছেন”। {তাসকীনুল খাওয়াতের}

কাজেমী সাহেব অতি চাতুরতার সাথে কোন জমানায় এমন ঘটনা ঘটেছিল, আর কোন আলেমরা এমন ফাতওয়া দিয়েছিলেন, কিংবা কোন কিতাবে এমন উদ্ভট কথা আছে তার কোন কিছুই উল্লেখ না করে একটি হাস্যকর মন্তব্য করে দিলেন। আসলে মনে হয় তিনি এমনটি স্বপ্নে পেয়েছিলেন!

যাইহোক! কথা হচ্ছে, রেজাখানী বেরেলবী বেদআতি গ্র“পকে যদি বলা হয় যে, আপনারা রাসূল সাঃ কে কেন হাজির নাজির বিশ্বাস করেন, অথচ আল্লাহ হলেন হাজির নাজির। তখন তাদের জবাব হল যেহেতু ৯৯ নামের মাঝে হাজির নাজির শব্দ নেই, আর দেখার জন্য শারিরিক চোখ লাগে আর আল্লাহ এসব থেকে পবিত্র তাই, আল্লাহ তাআলা দেখেন না।

পাঠকদের কাছেই বিচার রইল এমন যুক্তি ও উদ্ভটতার।

চতুর্থ জবাব

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

فَلَنَقُصَّنَّ عَلَيْهِمْ بِعِلْمٍ ۖ وَمَا كُنَّا غَائِبِينَ [٧:٧

অনুবাদ-অতঃপর স্বজ্ঞানে তাদের কাছে অবস্থা বর্ণনা করব। বস্তুত আমি অনুপস্থিত তো ছিলাম না। {সূরা আরাফ-৭}

 

এক হাদীসে এসেছে যে, সাহাবাগণ একবার জোরে জোরে জিকির করতেছিলেন। তখর রাসূল সাঃ তাদের জোরে জোরে জিকির করতে নিষেধ করে বলেন-

فإنكم لا تدعون أصم ولا غائبا إنه معكم إنه سميع قريب

অনুবাদ-নিশ্চয় তোমরা বধীর বা গায়েব তথা অনুপস্থিত কাউকে ডাকছো না। নিশ্চয় তিনি তোমাদের সাথেই আছেন। নিশ্চয় তিনি শুনেন, তিনি তোমাদের নিকটে। (তারপরও জোরে আওয়াজে কেন জিকির করছো?) {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২৮৩০, ৩৯৬৮, ৬০২১, ৬০৪৬, ৬২৩৬, ৬৯৫২}

আরেকটি যুক্তি ও তার খন্ডন

নবীজী সাঃ কে গায়ের জোরে হাজির নাজির বানানোর পায়তারাকারীদের আরেকটি হাস্যকর যুক্তি হল- হযরত আজরাঈল আঃ যদি একসাথে অনেক মানুষের জানকবচ করতে পারেন, তাহলে রাসূল সাঃ কেন এক সাথে সর্বত্র উপস্থিত হতে পারবেন না?

উত্তর-১

হযরত আজরাঈল আঃ কি একা একা জান কবচ করেন? না তার সাথে আরো ফেরেস্তা থাকেন? নিশ্চয় আরো অনেক ফেরেস্তা থাকেন। তাহলে একা রাসূল সাঃ সর্বত্র হাজির হওয়ার উদাহরণ দিতে গিয়ে হাজার হাজার সাথি বেষ্টিত আজরাঈল আঃ এর উদাহরণ দেয়াটা কি যৌক্তিক হয়েছে?

উত্তর-২

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যাকে যে কাজ করার দায়িত্ব দেন তাকে সেই কাজ করার ক্ষমতাও দিয়ে দেন। আজরাঈল আঃ কে আল্লাহ তাআলা সকল মানুষের জান কবচের দায়িত্ব দিয়েছেন, তাই কিভাবে করতে হবে, একসাথে অনেকের জান কবচের ক্ষমতাও আল্লাহ পাক তাকে দিয়েছেন। আর রাসূল সাঃ কে যেহেতু আল্লাহ তাআলা সারা পৃথিবীতে ঘুরে ঘুরে উম্মতীদের অবস্থা দেখার দায়িত্ব দেন নাই। তাই তাকে এ ক্ষমতাও দেয়ার কোন প্রয়োজন নেই।

উত্তর-৩

আজরাঈল আঃ একই সাথে একাধিক স্থানে রুহ কবচ করতে পারেন। তাই কি তিনিও হাজির নাজির? যদি বলা হয় যে, হ্যাঁ এ অর্থে আজরাঈল আঃ ও হাজির নাজির। তাহলে হাজির নাজির হওয়াটা রাসূল সাঃ এর বৈশিষ্ট রইল কোথায়? অন্যের মাঝে যা আছে তা থাকার নামতো বৈশিষ্ট নয়, বৈশিষ্ট বলাইতো হয় ঐ বস্তুকে যাতে ঐ ব্যক্তি খাস। যেটি অন্যের মাঝে নেই।

যদি বলা হয় যে, না আজরাঈল আঃ হাজির নাজির নয়, তাহলে আজরাঈল আঃ এর উদাহরণ দিয়ে রাসূল সাঃ এর হাজির নাজির প্রমাণিত হয় কি করে?

রাসূল সাঃ কে হাজির নাজির বিশ্বাস করা রাসূল সাঃ এর সম্মানকে খাটো করা

আমরা জানি যে, কোন সম্মানী ব্যক্তির দরবারে গিয়ে তাকে হাদিয়া দেয়াটা তাকে সম্মান জানানো। কিংবা কোন সম্মানিত প্রতিনিধির মাধ্যমে হাদিয়া পাঠানো সম্মানজনক।

কিন্তু হাদিয়া দেয়ার জন্য খবর দিয়ে ডেকে আনা যত্রতত্র এটা উক্ত সম্মানী ব্যক্তির জন্য সম্মানজনক নয়।

রাসূল সাঃ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের পর তামাম সৃষ্টিজীবের মাঝে শ্রেষ্ট। সর্বোত্তম। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। তার মত উত্তম চরিত্রের অধিকারী কেউ ছিল না। কখনোও হবে না। তার মত এমন সম্মানিত ব্যক্তিত্বের কাছে হাদিয়া পাঠানোটা সম্মানের। তাকে জান্নাতের বাগান মদীনা মুনাওয়ারার রওজা মুবারক থেকে তুলে এনে মদখোর, দাড়িহীন, টুপিহীন, সুন্নাতহীন মানুষের হালুয়া-রুটির মিলাদ মাহফিলে উপস্থিত করা হাজির নাজির বিশ্বাস করে কতটা সম্মানজনক বিবেকবান পাঠকরা একটু ভেবে দেখবেন।

অথচ রাসূল সাঃ একাধিক হাদীসে ইরশাদ করেছেন যে, তার উপর কেউ দরূদ পড়লে তা তার কাছে ফেরেস্তার মাঝে পৌঁছানো হয়। একদল ফেরেস্তা সর্বদা পৃথিবীব্যাপী ঘুরে দরূদপাঠকারীর দরূদ রাসূল সাঃ এর দরবারে পৌঁছানোর জন্য।

যদি রাসূল সাঃ হাজির নাজির হতেন, তাহলে ফেরেস্তা কেন দরূদ পৌঁছে দিতে নিযুক্ত থাকবে, রাসূল সাঃ নিজেইতো নাকি উক্ত মজলিসে উপস্থিত হয়ে যান!

দেখুন রাসূল সাঃ হাদীসে কী ইরশাদ করেছেন

عن أبي هريرة قال في رواية الحنفي قال : عن النبي صلى الله عليه و سلم قال : من صلى علي عند قبري سمعته و من صلى علي نائيا أبلغته

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে ব্যক্তি আমার কবরের পাশে গিয়ে দরূদ পাঠ করে তা আমি নিজেই শুনব। আর যে ব্যক্তি দূর থেকে আমার উপর দরূদ পাঠ করে তা আমার কাছে পৌঁছিয়ে দেয়া হয়। {সুনানে বায়হাকী, হাদিস নং-১৫৮৩, কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল ওকওয়াল ওয়াল আফআল, হাদিস নং-১৫৮৩}

আরেক হাদীসে রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন-

عن عبد الله بن مسعود قال قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم : ان لله ملائكة سياحين في الأرض يبلغوني عن أمتي السلام

অনুবাদ-হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ থেকে বর্র্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন- নিশ্চয় আল্লাহ তাআলার নিয়োজিত কতিপয় ফেরেস্তা জমীনে ঘুরে বেড়ায়, তারা আমার কাছে উম্মতের পক্ষ থেকে সালাম পৌঁছায়। {সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৯১৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৭৭৪, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৪৩২০}

হাজির নাজিরের বিশ্বাস রাসূল সাঃ এর হিজরত ও মিরাজ অস্বিকার

হিজরত মানে হল ছেড়ে দেয়া। আর রাসূল সাঃ এর হিজরত মানে হল, মক্কা ছেড়ে মদীনায় গমণ করা। এখন প্রশ্ন হল, যদি রাসূল সাঃ হাজির নাজিন হন সর্বত্র। তাহলে রাসূল সাঃ মক্কা ছেড়ে মদীনায় গিয়েছিলেন? না মদীনায় ছিলেন? হাজির নাজির হলেতো মক্কা থেকে মদীনায় যাওয়া প্রমাণিত হয় না। বরং তিনিতো মদীনায় হাজিরই ছিলেন। তাহলে হিজরত হল কি করে?

মিরাজ হল বাইতুল মুকাদ্দাস থেকে সপ্ত আকাশ ডিঙ্গে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের আরসে গিয়ে পৌছা। এখন প্রশ্ন হল, রাসূল সাঃ কি আল্লাহর আরসে গিয়েছিলেন? না ওখানে ছিলেন নাউজুবিল্লাহ। যদি হাজির নাজির হয়ে থাকেন, তাহলেতো যাওয়ার প্রয়োজন নেই। তিনিতো সেখানেই হাজিরই ছিলেন। তাহলে মিরাজ আর রইল কোথায়?

তাই রাসূল সাঃ কে হাজির নাজির বলাটা বাহ্যিকভাবে সম্মানজনক মনে করা হলেও আসলে চূড়ান্ত পর্যায়ের অপমানজনক বক্তব্য। এর দ্বারা রাসূল সাঃ এর হিজরত এবং মিরাজকে অস্বিকার করা হচ্ছে। আর হিজরত আর মিরাজ অস্বিকারকারীর নাম আশেকে রাসূল হতে পারে না, হবে আশেকে শয়তান।

শেষ কথা

রাসূল সাঃ আল্লাহর শ্রেষ্ঠ মাখলুক। সবচে’সম্মানী আল্লাহর পর। তার মত কেউ নেই। হবেও না কোনদিন। কিন্তু তাকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সমকক্ষও সাব্যস্ত করা যেমন যাবে না। তেমনি তার যথোপযুক্ত সম্মান ও বৈশিষ্ট অস্বিকার করাও যাবে না। এটাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের সঠিক আক্বিদা।

তাই আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের খাস বৈশিষ্ট হাজির নাজির হওয়াটি রাসূল সাঃ এর জন্য সাব্যস্ত করাটা একটি শিরকী আক্বিদা ছাড়া কিছু নয়।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সকল বাতিল আক্বিদা, শিরক-বেদআত থেকে বেঁচে সঠিক পদ্ধতিতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রিয়ভাজন হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমীন। ছুম্মা আমীন।

লেখক– লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

Facebook Comments