সফল মাহাথির, আপনিও সফল হোন। মাহাথিরের অনন্য জীবন

469
মাহাথির মুহাম্মদ

মুফতী ওযায়ের আমীনঃ- আধুনিক মালয়েশিয়ার সফল রুপকার । যিনি নিজের প্রতিষ্ঠিত দলের বাইরে গিয়ে বিরোধী দলের হয়ে এই বুড়ো বয়সে ক্ষমতার মসনদে আসিন হন । আসুন জানি তার সফল জীবনের কথা.. মাহাথির মোহাম্মদ

জন্ম ও প্রাসঙ্গিক কথাঃ ডাঃ মাহাথির মোহাম্মদ ১৯২৫ সালে ২০ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ার এক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা মোহাম্মদ ইস্কান্দারের নয় সন্তানের মধ্যে মাহাথির ছিলেন সবার ছোট। তার পিতা একজন স্কুল শিক্ষক ছিলেন এবং পরবর্তীকালে সরকারি অডিটর হিসেবে কাজ করেছেন। তার মা ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত ছিলেন এবং মাহাথিরকে বাসায় পবিত্র কোরআন শিক্ষা দিতেন।
তিনি ১৯৮১-২০০৩ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ছিলেন। তার দল পর পর পাঁচবার সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। তিনি এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ২০০৩ সালের ৩০শে অক্টোবর তিনি স্বেচ্ছায় প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেন। এখন আবার প্রধানমন্ত্রী হলেন ।

শিক্ষা জীবন মাহাথির মোহাম্মদ। স্কুলে শিক্ষা লাভ করেন। নিজ বাসায় ধর্মীয় শিক্ষকের নিকট কোরআন ও ইসলাম শিক্ষা লাভ করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ১৯৪১ সাল। জাপান মালয়েশিয়ায় আক্রমণ করে। তার সে স্কুল বন্ধ করে দেয়। মাহাথিরের বয়স তখন ষোল। সে সময় মাহাথির একটি স্থানীয় ছোট বাজারে কলা বিক্রি শুরু করেন।

মাহাথির তার শিক্ষা জীবন শুরু করেন সেবেরাং পেরাক মালয় স্কুলে। কিন্তু তিনি চাইতেন ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করতে। সমস্যা হলো, ইংরেজরা মালয় ছেলেমেয়েদের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে সহজে সুযোগ দিত না। ভর্তি পরীক্ষা হতো খুবই কঠিন। তাই মালয় ছেলেমেয়েদের জন্য সুযোগ পাওয়া ছিল দুঃসাধ্য।

সেই ছোটবেলাতেই তিনি এ বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেন। সবাইকে অবাক করে দিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় প্রথমদিকে স্থান করে নেন। আলোর সেতারের গভর্নমেন্ট ইংলিশ স্কুলে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা শুরু করেন মাহাথির।

মাহাথির থেকে ড. মাহাথির: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মাহাথির অনুভব করেন সমাজের জন্য কিছু করার। তখন সিদ্ধান্ত নেন সমাজের জন্য কিছু করতে হলে হয় তাকে আইনবিদ অথবা ডাক্তার হতে হবে। মেধাবী মাহাথির খুব সহজেই বৃত্তি পেয়ে যান। প্রথম পছন্দ আইন হলেও সরকারের পক্ষ থেকে তাকে বলা হয় ডাক্তার হওয়ার। কেননা মালয়েশিয়ায় তখন বেশ কয়েকজন আইনবিদ ছিলেন। সিঙ্গাপুরের কিং অ্যাডওয়ার্ড সেভেন মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন মাহাথির। ১৯৪৭ সালে মাত্র সাতজন মালয় শিক্ষার্থী ছিলেন ঐ মেডিকেল কলেজে।

মাহাথিরের ব্যক্তি জীবন ব্যক্তিজীবনে মাহাথির ছিলেন একজন স্বপ্নদ্রষ্টা। তিনি একাই যে স্বপ্ন দেখেছেন এমনটা নয়। পুরো জাতিকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন তিনি। চীনা, মালয়ী, তামিলসহ বিভিন্ন জাতিতে বিভক্ত মালয়েশিয়াকে এক ছাতার নিচে নিয়ে আসতে সক্ষম হন তিনি। তিনি কর্মীদের যা করতে বলেছেন তা নিজে করেও দেখিয়েছেন।

সরকারি কর্মীরা যেন ঠিক সময়ে অফিসে আসেন সেজন্য নিজেও ঠিক সময়ে অফিসে আসতেন। টাইম ম্যাগাজিন একবার তার অফিসে আসার সময় রেকর্ড করেছিল। পরপর পাঁচ দিন তার অফিসে প্রবেশের সময় ছিল সকাল ৭:৫৭, ৭:৫৬, ৭:৫৭, ৭:৫৯, ৭:৫৭

তিনি নিজে একজন পরিশ্রমী এবং শৃংখলা পরায়ণ মানুষ ছিলেন। সময়ের মূল্য দিতে জানতেন তিনি।

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শাস্ত্র পড়ার সময় তার সাথে যে ছয় জন মালয়ী শিক্ষার্থী ছিলেন তাদের একজন ছিলেন সিতি হাসমাহ নামের একজন ছাত্রী। এই সিতিকেই নিজের জীবনের সঙ্গী করে এতটা পথ হেটেছেন। সাত সন্তানের জনক তিনি ।


কর্মজীবন
১৯৫৩ সালে তিনি চিকিৎসক হিসেবে চাকুরীতে যোগ দেন। মালয়েশিয়ার স্বাধীনতার পূর্বে তিনি সরকারি চাকুরী ছেড়ে নিজ শহরে একটি প্রাইভেট ক্লিনিক শুরু করেন। তিনি রোগীদের বাড়িতে যেতেন এবং মাঝে মাঝে ছোট খাট অস্ত্রপচার করতেন।

ডাক্তার থেকে রাজনীতিক: একটি মুল্যায়ন
মাহাথিরের মতে চিকিৎসক হিসেবে তার প্রশিক্ষণ ও প্রাকটিস তার মধ্যে স্থিরতা এনেছিল। তিনি ডাক্তারি পেশায় গবেষণা করেই যে কোন পরিস্থিতি মূল্যায়ন করার সক্ষমতা অর্জন করেছিলেন। তিনি একবার ‘দ্যা ইকোনমিষ্ট’ পত্রিকাতে বলেছিলেন, “চিকিৎসা বিদ্যায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোকের জন্য রাজনীতি একটি ভাল পেশা। একজন ডাক্তার রোগীকে পর্যবেক্ষণ করেন, স্বাস্থ্যগত ইতিহাস রেকর্ড করেন, স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন, ল্যাব পরীক্ষা করেন এবং চূড়ান্তভাবে রোগ নির্ণয় করেন। এ প্রক্রিয়াটি রাজনীতির মতই।” ১৯৭৪ সালে মন্ত্রী হবার আগ পর্যন্ত তিনি চিকিৎসা পেশা অব্যাহত রেখেছিলেন।

রাজনীতি
মাহাথির বিশ বছর বয়সেই রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। সহপাঠীদের একত্র করে তিনি গোপনে ‘মালয়ান ইউনিয়ন’ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন। মালয়ান ইউনিয়ন প্রকৃতার্থে বৃটিশ উপনিবেশ ছিল। মাহাথির ও তার বন্ধুরা তখন রাতের অন্ধকারে সারা শহরে রাজনৈতিক পোষ্টার লাগাতেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল সীমিত, ‘মালয়ান ইউনিয়ন’ প্রস্তাবের সমাপ্তি এবং প্রজাতন্ত্রের মর্যাদা ফিরে পাওয়া।

সাইকেল চালিয়ে তারা সমগ্র প্রদেশ ঘুরে ঘুরে জনগনকে ব্রিটিশ বিরোধী হিসেবে সংঘটিত ও সক্রিয় করার কাজে ব্যস্ত থাকতেন। সংগঠনে মাহাথির সাধারণত সম্পাদক বা দ্বিতীয় অবস্থানটা বেছে নিতেন, কারণ দ্বিতীয় ব্যক্তিকেই বেশি সাংগঠনিক কাজ করতে হয় ও অন্য দলগুলোর সাথে যোগাযোগ রাখতে হয়।

মাহাথির প্রথমে ‘কেদাহ মালয় যুব ইউনিয়ন’ এবং পরে ‘কেদাহ মালয় ইউনিয়ন’ নামে রাজনৈতিক দল গঠন করেন। পরবর্তিতে এটা-ই ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন বা ইউএমএনও (UMNO) হিসেবে পরিচিত হয়।

সিঙ্গাপুরেও মাহাথির সংগঠক
সিঙ্গাপুরে থাকাকালীন মাহাথির সেখানের কলেজের মালয় ছাত্রদের নিয়ে ‘মালয় ছাত্র সংগঠন’ গঠন করেন। তবে এই সংগঠনের উদ্দেশ্য ছিল ছাত্রদের শিক্ষার মান ও ফলাফল উন্নয়ন করা। এর কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল না।

জাতীয় রাজনীতিতে মাহাথির
সরকারি চাকুরীতে থাকাকালীন তিনি সক্রিয় ভাবে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হতে পারেন নি। নিজ ক্লিনিক চালু করার পর তার জাতীয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ততা বাড়তে থাকে। ইউএমএনও-এর প্রাদেশিক শাখার উর্ধ্বতন পদে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

১৯৬৪ সালে ৩৯ বছর বয়সে মাহাথির প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপরও এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সাহায্যে তিনি ডাক্তারি প্রাকটিস অব্যাহত রাখেন। ১৯৭৪ সাল নাগাদ তিনি এই পেশা ধরে রেখেছিলেন।

১৯৬৯ সালে তিনি দ্বিতীয়বার নির্বাচনে প্রার্থী হন। সেই বছর ইউএমএনও এর নেতৃত্বে জোটবদ্ধ সম্মিলিত সরকার গঠিত হয়। ইউএমএনও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। কয়েকটি প্রদেশে তারা সরকার গঠন করতেও সক্ষম হয়নি।


এটাও পড়ুন – বাংলার মুসলিম জাগরণে ইসলাম প্রচারক মুনশী মেহের উল্লাহ


১৯৬৯ সালের ৩০শে মে কুয়ালালামপুরে যখন চীনা ও মালয় জাতির মধ্যে তুমুল-দাঙ্গা শুরু হয় তখন রাজনৈতিক সংকট চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে। এই দাঙ্গার জন্য মাহাথির ইউএমএনও নেতৃত্বকে দোষারোপ করে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্কু আবদুর রহমানকে কড়া ভাষায় চিঠি লেখেন ও পদত্যাগের পরামর্শ দেন। এ সমালোচনা পার্টি নেতৃবৃন্দ সহ্য করলেন না। তারা মাহাথিরকে দল থেকে বহিষ্কার করলেন। পরবর্তী তিন বছর তিনি নিজ দেশেই রাজনীতি থেকে নির্বাসনে ছিলেন।

১৯৭২ সালে মাহাথিরকে আবার দলের সদস্য ও সিনেটর হিসেবে পুনর্বহাল করা হয়।

শিক্ষামন্ত্রী মনোনীতঃ ১৯৭৪ সালে দল নির্বাচনে জয়ী হবার পর তাকে শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়।

উপ-প্রধানমন্ত্রী মনোনীতঃ ১৯৭৬ এ উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেন। এতে তিনি সফল হন। উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের জন্য অনেক কিছু করার পরিকল্পনা থাকলেও মাহাথির স্বাধীনভাবে সেগুলো বাস্তবায়ন করতে সক্ষম ছিলেন না।

প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত ১৯৮১ সালে তিনি সর্বপ্রথম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এপর্যায়ে এসে তিনি তার সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সম্পূর্ণ মুক্ত হন। সেই থেকে টানা ২২ বছর মাহাথির মোহাম্মদ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এর মধ্যে প্রতিবার তিনি ও তার দল নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেন।

মাহাথির মোহাম্মদ এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘ সময় যাবৎ নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৩ সালের ওআইসি সম্মেলনের সফল সমাপ্তির পর ৩০শে অক্টোবর তিনি স্বেচ্ছায় দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

অন্যরকম প্রধানমন্ত্রী: মাহাথিরই পৃথিবীর একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি নিজের নাম লেখা ব্যাজ পরতেন। মাহাথির সঙ্গে ছোট্ট একটি নোটবুক রাখতেন। তার সব চিন্তা লিখে রাখতেন সেই নোটবুকে। ডিপার্টমেন্টাল স্টোর সাজানো থেকে শুরু করে সরকারি রীতিনীতি পর্যন্ত সবকিছুই তিনি লিখে রাখতেন।

আধুনিক মালয়েশিয়া:
ডাঃ মাহাথির মোহাম্মদ বিশ্বময় আধুনিক মালয়েশিয়ার প্রধান রূপকার হিসেবে পরিচিত। প্রধানমন্ত্রী হবার পর তিনি সকল বিষয় পুনঃপরীক্ষা করেন। সকল নীতি, পদ্ধতি, সরকার চালাতে প্রাত্যহিক সকল কাজ, আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করা হয়।

তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ওয়ার্ক-ফ্লো চার্ট আর অফিস ম্যানুয়েল প্রবর্তন করেন। মাহাথির ও তার সরকার দীর্ঘমেয়াদী কর্মসূচি তৈরি করেন যার মাধ্যমে প্রত্যেকে তার নিজ নিজ ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন হয়। ব্যবসা এবং রাজনীতিতে ফুটপাতের লোক থেকে সর্বোচ্চ নেতৃত্ব পর্যন্ত দেশের জন্য নিজের জন্য কাজ করবে।

১৯৯০ সালে মালয়েশিয়া বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ৮% ছাড়িয়ে যায়। মাহাথির ১৯৭১ সালে প্রনিত নিউ ইকোনমিক পলিসি (এনইপি) সফল ভাবে বাস্তবায়নে সচেষ্ট হন। এনইপির উদ্দেশ্য ছিল জাতি নির্বিশেষে দারিদ্র্য বিমোচন এবং অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে জাতি পরিচয় মুছে ফেলা। নতুন সম্পদ সৃষ্টি করা এবং এর বৃহত্তর অংশ দরিদ্রদের জন্য নিশ্চিত করার মাধ্যমে সম্পদের পুনঃবন্টনের চেষ্টা করা হয়।

১৯৯১ সালে বিশ বছর মেয়াদি এনইপি শেষ হয়। দারিদ্র্য বিমোচন বহুলাংশে অর্জিত হয়। সমৃদ্ধির একটি পর্যায়ে পৌছে মালয়েশিয়া বিভিন্ন জাতির সুসম্পর্কসহ একটি জাতিতে পরিনত হয় যা অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের জন্য ঈর্ষনীয়। বিশ বছর মেয়াদি এনইপি শেষ হবার পর দশ বছর মেয়াদি ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট পলিসি (এনডিপি) প্রনয়ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

যেভাবে বদলে দিলেন মালয়েশিয়াকে

মালয়েশিয়ার আমূল পরিবর্তনে শুরু থেকেই স্বপ্ন দেখেছেন মাহাথির। ক্ষমতায় আসার পর একের পর পরিকল্পনা গ্রহণের পাশাপাশি বাস্তবায়নও করেছেন সেগুলো। দেশটির ২০২০ সাল পর্যন্ত অর্থনৈতিক কর্মসূচিও তাঁর ঘোষণা করা ছিল। মাহাথির শাসনামলের গুরুত্বপূর্ণ দিক-

  • মালয়েশিয়ার সকল মুসলিমদের জন্য ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেন তিনি।
  • মালয়েশিয়ানদের শিক্ষার ৯৫ শতাংশ খরচ সরকার বহন করে। এই নীতি চালু হয় মাহাথিরের আমল থেকে।
  •  আশির দশকে গৃহিত ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট পলিসি বাস্তবায়ন করা শুরু করেন তিনি। ফলাফল এই যে, ১৯৯২ সালে নিজ দেশের সবাইকে কর্মসংস্থান দিয়ে উলটো আরও ৮ লক্ষ বিদেশী শ্রমিক নিয়োগ দেয় মালয়েশিয়া।
  • একই বছর শুধু যুক্তরাষ্ট্র আর ভারতেই ৬৫০ কোটি ডলারের বেশি পণ্য রপ্তানি করে।
  • পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার নির্মাণ, সমুদ্র থেকে ৬,৩০০ হেক্টর জমি উদ্ধার, অত্যাধুনিক এয়ারপোর্ট তৈরি, একাধিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, হাইওয়ে নির্মাণসহ তার অসংখ্য উদ্যোগ সফল হয়েছে।
  • ১৯৯০ সালেই বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ছাড়িয়ে যায় ৮ শতাংশের বেশি।
  • ১৯৮২ সালে থাকা মালয়েশিয়ার ২৭ দশমিক ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ জিডিপি ২০০২ সালে এসে দাঁড়ায় ৯৫ দশমিক ২ বিলিয়ন ডোলার।
  • অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশগুলোর তালিকার তলানীতে থাকা মালয়েশিয়াকে নিয়ে আসেন তালিকার ১৪তম স্থানে।
  • সরকারি দপ্তরগুলোতে আমূল পরিবর্তন আনেন তিনি। সরকারি কর্মীরা যেন ঠিক সময়ে অফিসে আসেন তার জন্য প্রথমবারের মতো চালু করেন ফ্লো-চার্ট।

 

ইসলাম ও মাহাথির
ইসলাম ধর্মের প্রতি বিশ্বাস মাহাথিরের ভিতর আসে পরিবার থেকে। তার পরিবার তাকে ইসলামের উপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখতে শিক্ষা দেয়। কিন্তু তাদের কোন রূপ গোঁড়ামি ছিল না। ইসলাম সম্পর্কে “এ নিউ ডিল ফর এশিয়া” গ্রন্থে মাহাথির বলেন, ” ইসলাম ধর্ম আমাদের জীবনের অংশ। একে পরিত্যাগ করার কোন কারণ নেই। সঠিক ভাবে ব্যাখ্যা করা হলে ধর্ম কখনই অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য বাধা হতে পারে না। ইসলামের শিক্ষা সমসাময়িক সময়ের দৃষ্টিভঙ্গিতে নিতে হবে। ইসলাম শুধু মাত্র সপ্তম শতাব্দীর ধর্ম নয়। ইসলাম অবশ্যই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম।

লেখক – মুফতী ওযায়ের আমীন
জামেয়া রাহমানিয়া দারুল ইসলাম।
দক্ষিণ কাজলা, যাত্রাবাড়ি, ঢাকা-১২৩৬

তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া,রোর বাংলা,ইন্টারনেট;

Facebook Comments