মাওলানা ভাসানী (রহ:) আজো কেন আমাদের কাছে অজানা ?

0
657
মাওলানা ভাসানী

অবহেলিত ভুলে যাওয়া মাওলানা ভাসানী রহ. নিয়ে গভীর বেদনায় কিছু না বলা কথা তুলে ধরছি। বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা জাতীয় এই নেতার জন্ম বার্ষীকি আজ। দারুল উলুম দেওবন্দের মেধাবী ছাত্র, শায়খুল হিন্দের শিষ্য মুফতি মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসিনী রহ কেন আজ ইতিহাসে কমরেড বলে পরিচিত? মাওলানা ভাসানী রহ দীর্ঘ জিহাদী কাযর্ক্রম ও দ্বীনী জজবাকে কারা গোপন করেছে?

কেন? বাংলা পিডিয়া সহ জাতীয় জ্ঞানকোষে আজ কেন তার সঠিক ইতিহাস নেই? বর্তমান প্রজন্ম ভাসিনীকে কতটুকো জানি!

ভাসনীর জীবনী কেন আজো খন্ডিত? কোন অপরাধে? কার অবহেলায়? ১৯৩৭ সালে মুসলীম লীগে যোগ দিয়ে রাজনীতিতে পদার্পণের আগের ৫১ বছরের জীবন নিয়ে কোন চর্চা গবেষনা নেই কেন? পুনাঙ্গ ভাসানী চর্চা কেন হচ্ছে না। কাদের অবহেলা আর চিন্তার দন্যতার ফলে আপন ভাসানী পর হলেন। তারাও বলে আমাদের ভাসানী, আমরাও বলি তাদের ভাসানী। মাওলানা জিহাদী ভাসানীকে কমরেড আর সমাজতান্ত্রিক নেতা হিসাবে মৃত্যুর পর কিভাবে পরিচিতি পেলেন? ইউকেপিডিয়া বলছে তিনি প্রভাবিত হয়েছেন, কার্ল মার্ক্স, মাঙ সে তুং। প্রভাবিত করেছেন রাশেদ খান মেনন কে।

কিন্তু Wikipedia আবার একই প্রবন্ধের অনর্থ্য বলেছে আইয়ূব খান সরকারেন পতনের পর নির্বাচনের পূর্বে

” ভোটের আগে ভাত চাই, ইসলামিক সমাজতন্ত্র কায়েম চাই “

এই দাবী উত্থাপন করেন। যে মানুষটি ইসলামী সমাজতন্ত্র কায়েমের দাবী পেশ করলেন ৭০ সালে। তিনি এর মাত্র ছয় বছর পর ১৯৭৬ সালে মৃত্যুর পর কমরেড আর মাক্সবাদী হয়ে গেলেন কিভাবে? তিনি ইসলামী সমাজতন্ত্রের প্রবর্ক্তা মুহাম্মদুর রাসুল সা. এর প্রভাবে প্রভাবিত না হয়ে কিভাবে কাল মাক্সের প্রভাবে প্রভাবিত হতে পারেন? এই প্রশ্নের উত্তর কে খোঁজবে? কারা খোঁজবে? আমাদের ঘুমন্ত্র চেতনা কি জাগবে না? এই তথ্য সন্ত্রাসের বিরোদ্ধে কাজ করতে কি জাগবে না কেউ। আমরা খোঁজে বের করতে পারি না ইতিহাসের সেই চাপা পরা সত্যকে, যে ভাসানী রহ ছিলেন শায়খুল হিন্দ চেতনার নায়ক। তার হাতে তিনি নিয়েছিলেন স্বাধীনতা ও আযাদীর লড়াইয়ের জেহাদী বাইয়াত।

একজন মাওলানা এদেশের মুক্তি লড়াইয়ে অসামান্য অবদান আর জাতীকে গন চেতনায় রাজনৈতিক বলিষ্ট নেতৃত্ব প্রদানকে আড়াল করতেই কলমের মাধ্যমে বুদ্ধিভিত্তিক এতো নাটক আর ভাসানী ইতিহাস নিয়ে এতো গাফলা তৈরি করে রেখেছেন বামরা। আমরা পানের পিক গিলেছি আর মুছে তা দিয়েছি আর মাক্সবাদীরা পরিকল্পিতভাবে এক মাওলানাকে নিয়ে নাটক, সিনেমা, গল্প কবিতা আর ইতিহাস তৈরি করেছে নিজের মতো করে। গন রাজনৈতিক চেতনায় ভাসানী যখন তন্ময় ইসলামী সমাজতন্ত্র নিয়ে তখন আমাদের শায়েখরা দরস আর খানকাতেই ব্যস্ত ছিলেন।

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দেকী গত কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ প্রতিদিন বলেছেন, হুজুর ভাসানীর সৃষ্টি বঙ্গবন্ধু, আর বঙ্গবন্ধুর সৃষ্টি আমরা। হুজির ভাসানীর জন্ম না হলে বঙ্গবন্ধু সৃষ্টি হতেন না, সৃষ্টি হত না বাংলাদেশ। তাই বাংলাদেশের ইতিহাস হুজুর ভাসানীকে এড়িয়ে লিখা সম্ভব নয়। বাহান্নর মহান রাষ্টভাষা আন্দোলনের তিনি ছিলেন প্রধান প্রেরণাদাতা। সর্বদলীয় রাষ্টভাষা কর্মপরিষদের তিনি ছিলেন সভাপতি। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে এদেশের প্রতিটি আন্তোলনের পুরোভাগে ছিলেন। স্বাধীনতা আন্দোলনে তার গৌরবদীপ্ত ভুমিকার কথা জাতি এখনো স্মরন করে শ্রদ্ধাভরে।

১৯৫৪ সালে যুক্তফন্টের জোটে ( হক, ভাসানী, আতাহর জোট) মাওলানা আতাহর আলীর নেতৃত্বে মাওলানারা ভাসানীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলালেন। এর পর ৭১ সালের পর বঙ্গবন্ধুর বাকশালের সময় বামদের দমন নিপিড়নের সময় কোন পথ না পেয়ে সুবিধাবাদী কালমাক্সরা কোন নেতা তখন বাকশালের বিরোদ্ধে সাহস নিয়ে কথা বলার মতো না পেয়ে ভাসানীর সফেদ পাঞ্জাবীর আস্তিনের নিচে আশ্রিত হয়েছিল । বামদের আশ্রয় দেয়ার উদারতাটুকো কাল হল ভাসানীর জন্য। তারা এই সুযোগের অপ ব্যবহার করে পরবর্তি সময়ে তার মেকী ভক্ত সেজে অপপ্রচার করলো কমরেড ভাসানী আর মাক্সবাদী ভাসানী বলে। ভাসানী ডান বাম নিয়ে তখন ন্যাপ আওমী পাটি গঠন করেন। ভাসানী চেতনার সাথে থাকতে না পেরে আলাদা ন্যপ ( মোজাফ্ফর) বামরা কেন গঠন করেছিল সে ইতিহাস কেন আজ চাপা পড়া?

১৯৪৭ সালে তার প্রতিষ্টিত ” হুকুমতে রব্বানিয়াত” পাটিকে মৃত্যুর আগে কেন আবার চাঙ্গা করতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। কি ছিল হিকুমতে রব্বানিয়াতের লক্ষ্য উদ্দ্যেশ্য, তা কি কখনো বেরিয়ে আসবে না? কোন মৃত্যুর পূর্বে ” খোদায়ী খেদমতগার” গঠন করেছিলেন একজন কমরেড! খোদার প্রতি কেন এতো প্রেম আর ভালবাসা ছিল তার। তা নিয়ে কি গবেষনার এখনো সময় আসে নি আদর্শিক তারুন্য আর সত্যকারের ভাসানী সৈনিকদের।
হে আল্লাহ, তাকে জান্নাতের সবোর্চ্চ মাকাম দান কর


এটা পড়তে পারেন – আযাদীর শিরোনাম : শহীদ টিপু সুলতান রহ.

===================

লেখক বহু গ্রন্থপ্রণেতা,দায়ী,সমাজ সেবক-সৈয়দ আনোয়ার আবদুল্লাহ.

Facebook Comments

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here